স্বদেশ ডেস্ক:
বছর ৩০ আগে ভারতে গিয়ে নাগরিকত্ব নেন ইস্তাফন খাতুন (৬৪)। রোববার দিবাগত মধ্যরাতে মেহেরপুরের নবীনগর খালপাড়া সীমান্তের ১১৬ নম্বর মেইন পিলারের কাছে তারকাঁটা পার হয়ে বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ভারতের নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। পরে তার লাশ ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহত ইস্তাফন খাতুনের বড় ভাই হাসেম আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বুড়িপোতা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্প কমান্ডার মন মোহন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনাটি ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। তাই এ বিষয়ে বিএসএফ আমাদের কিছুই যানাইনি।
নিহত ইস্তাফন খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার শালিকা গ্রামের মৃত কোমর আলীর মেয়ে।
ইস্তাফন খাতুনের বড় ভাই হাসেম আলী, ৩০ বছর আগে আমার বোন ভারতে পারি জমান। ভারতের বিহারের একটি শহরে বাসিন্দা রহমত আলীর সাথে বিয়ে করে বসবাস করে আসছিলেন। সে ওই দেশের নাগরিক হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে তার স্বামী রহমত আলী মারা গেছেন।
তিনি আরো বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর সেখানে তার দেখা শোনার কেউ নেই। বাকি জীবনটা আমাদের পরিবারে সাথে কাটানোর কথা তার। তারকাঁটা পার হওয়ার জন্য গত তিন দিন সীমান্তের ওপারে ভারতের নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার নবীনগরে অবস্থান করছিলেন তিনি। রোববার দিবাগত রাতে আমাদের সাথে তার শেষ কথা হয় মোবাইল ফোনে। বলেছিলেন সুযোগ পেলেই তারকাঁটা পার হবেন।
তিনি বলেন, মধ্যরাতে খবর পাই তারকাঁটা পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বাংলাদেশী ভেবে তাকে নাটনা বিএসএফ ক্যাম্পে সদস্যরা ভারতের অভ্যন্তরে গুলি করে হত্যা করেছে। পরে তার লাশ নদীয়া জেলার তেহট্ট থানার ৮৪নং বিএসএফ ব্যাটালিয়ন নাটনা ক্যাম্পে নিয়ে গেছে।
বোনের মৃত্যুর খবরে সীমান্তে ছুটে গিয়েও তার লাশের দেখা মেলেনি পরিবারের।
হাসেম আলী বলেন, ‘জীবনের শেষ সময়টুকু কাটাতে চেয়েছিলেন পরিবারে ভাই-বোনদের সাথে। সে আশায় গত দেড় বছর ধরে চেষ্টা করেও আসতে পারেননি নিজ দেশে।’
বুড়িপোতা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মন মোহন বলেন, খালপাড়া সীমান্তে নিহতের ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরে ঘটেছে। এ বিষয়ে বিএসএফ আমাদের কিছু জানাইনি।
তিনি আরো বলেন, ‘নিহত নারীর জন্ম বাংলাদেশে, তার ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা সীমান্তবর্তী গ্রাম শালিকাতে বসবাস করেন। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কাছে অবৈধভাবে আসতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটেছে।’
সূত্র : ইউএনবি